• বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

কৃষকের ২ হাজার ড্রাগন ফলের গাছ কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা

  • ''
  • প্রকাশিত ১৭ মার্চ ২০২৪

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:

আল্লাহ তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই,তোমার কাছে বিচার দিলাম,তুমি এর বিচার করো,আমার পাশে দাড়ানোর কেউ নেই। আমার ড্রাগন গাছ যারা কেটেছে তাদের তুমি বিচার করো! কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বলছিলেন ড্রাগন চাষী কামরুল লস্কার। শুক্রবার মধ্যরাতে কে বা কারা তার ৮০ শতক জমির মধ্যে ২৫ শতক জমির (৮টি লাইনের অর্ধেক করে) ২ হাজার ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে তার ড্রাগন গাছে ফল ধরার সম্ভবনা ছিল। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়েনের বেড়াশলা গ্রামের মাঠে এই ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক উপজেরার মধুহাটি ইউনিয়নের বেড়াশুলা গ্রামের মৃত তোয়াজ উদ্দীনের ছেলে।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল এরিয়া জুড়ে দুই ভাইয়ের ড্রাগন বাগান। তার মধ্যে ৮০ শতক ড্রাগন বাগান কামরুল লস্কারের। ড্রাগন গাছগুলো দেখতে বেশ সতেজ। দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে গাছ গুলো নিচ থেকে কাটা হয়েছে। ড্রাগন বাগানের ৮টি লাইনের অর্ধেক করে গাছের নিচ থেকে এক দেড় ফুট উচু করে কাটা হয়েছে। কেউ শত্রুতাবশত এই ক্ষতি করেছে বলে ধারনা করছে গ্রামবাসি। তবে কে বা কারা এই ড্রাগন বাগানের গাছ কেটেছে এখনো সনাক্ত করতে পারেনি।

তবে তার এই বাগনে ৪-৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলকাবাসির দাবি দুর্বৃত্তদের সনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক। ড্রাগন চাষী কামরুল লস্কার বলেন, ২ হাজারের বেশি ড্রাগন গাছ কেটে ফেলেছে। কেটে দেওয়া গাছগুলো থেকে শুধু ১বার ফল বিক্রয় করেছি। এখন নতুন করে ফল ধরার সময় হয়েছিল। ২ বছর আগে ৮০ শতক জমিতে প্রায় ৮ হাজার ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করা হয়েছিল।

এর পেছনে তার প্রায ১৫-১৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শুক্রবার সকালে জমিতে এসে দেখতে পাই প্রায় ২ হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে ৩-৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২২ সালে ৮০ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করে। বাগানে মোট ৮ হাজার গাছ ছিল। যে ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে তার পরিমাণ ২৫ শতকের বেশি। বাগানের মাঝ থেকে ৮টি লাইনের অর্ধেক করে কেটে ফেলা হয়েছে। এই ড্রাগন বাগান করেতে এপর্যন্ত ১৫-১৬ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। প্রথম বছরেই ১লাখ ৫০ হাজার টাকার ড্রাগন বিক্রয় করা হয়েছিল।

বাগান থেকে যে ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে সেখানে আনুমানিক ৩-৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে দাবি যারা এই ড্রাগন গাছ কেটেছে তাদের সনাক্ত করে আইনের আয়তাই এনে শাস্তি দেওয়া হোক। ড্রাগন চাষী আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেড়াশুলা গ্রামের ড্রাগন চাসী কামরুল ভাইয়ের সাথে ফল বিক্রয়রে মাধ্যমে সম্পর্ক। তার বাগানে ড্রাগন গাছ কাটার সংবাদ শুনে ছুটে আসছি।

আমরা দুজনে একই সাথে ড্রাগন বাগান করেছি। আমার বাগানের থেকে তার বাগানের ড্রাগন গাছ অনেক ভালো। এতো সুন্দর ড্রাগন গাছ প্রত্যেকটি গাছে নিচ থেকে এক থেকে দেড় ফুট উচু করে কেটে দিয়ে গেছে। যা একজন কৃষকের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দাবী যে দুর্বৃত্তরা এই নেক্কার জনক কাজ করেছে তাদেরকে যেন সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক। যেন এমন কাজ আর করতে না পারে। মধুহাটি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, আমার বেড়াশুলা ব্লকের ড্রাগন চাষী কামরুলের ড্রাগন বাগানের ৮টি লাইনের অর্ধেক করে ড্রাগন গাছ দুর্বৃত্তরা কেটে দিয়েছে।

এতে করে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। ড্রাগন গাছ গুলো নিচ থেকে ১ থকে দেড় ফুট উচ্চাতা রেখে কাটা হয়েছে। এতে করে তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, এই ড্রাগন গাছ গুলো ভালো ভাবে পরিচর্যা করতে পারলে হয়তো আগামী দুই বছর লাগবে এই পর্যায়ে ফিরে আসতে। তারপরও আমার কৃষি অফিসের মাধ্যমে ড্রাগনের প্রদর্শনী দেওয়া হয়। তাকে যেন অফিসে থেকে একটা প্রদর্শনী দেওয়া যায় সেই বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। তবে তার যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতি কোন ভাবেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।

মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের বেড়াশুলা ওয়ার্ডের মেম্বর ইকবাল হোসেন বলেন, কামরুল লস্কারের ড্রাগন বাগানে কে বা কারা গাছ কেটে দিয়েছে। তার বাগান থেকে ২ হাজার ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে। আগমী ১ মাসের মধ্যেই তার বাগানে ফল আসতো। তার জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন কৃষকই তার দুঃখ বুঝতে পারবে। তবে কে এই জঘন্য কাজ করছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে প্রশাসনের কাছে আবেদন এই কাজের সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহিন উদ্দীন জানান ক্ষতিগ্রস্থ চাষি একটি অভিযোগ দিয়েছিল। সেটা আবার তিনি প্রত্যাহার করে নিয়ে গেছেন। তবে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন। দোষি সনাক্ত হলে আইনের আওতায় আনা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads